যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের ওপর যেকোনো অতিরিক্ত সামরিক হামলা বাদ দেয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে—এমন বার্তা দিয়েছেন তেহরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখত-রাভানচি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই কূটনৈতিক আলোচনা পুনরায় শুরু করতে চাইলে, আগে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে।
রোববার (৩০ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তাখত-রাভানচি জানান, ট্রাম্প প্রশাসন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ইরানকে আলোচনায় ফেরার প্রস্তাব দিলেও, আলোচনা চলাকালীন সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে তারা কিছু বলেনি।
তিনি বলেন, “আমরা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে করছি। এটি আমাদের অধিকার, আর এর প্রশ্নে আপসের সুযোগ নেই। সমৃদ্ধকরণের মাত্রা নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তবে কেউ যদি শূন্য সমৃদ্ধকরণের দাবি করে এবং তা না মানলে বোমা ফেলে—তবে সেটা জঙ্গলের আইন।”
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ মাত্রা ৩.৬৭ শতাংশে সীমিত ছিল। তবে ট্রাম্প প্রশাসন চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানও সীমা লঙ্ঘন করে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধকরণ শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) বলছে, ইরানের এই মজুদের পরিমাণ অন্তত নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য যথেষ্ট।
তাখত-রাভানচি বলেন, আলোচনার জন্য এখনও কোনো নির্ধারিত তারিখ নেই। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আলোচনা চলাকালে কি আবারও হামলা হবে? যুক্তরাষ্ট্রকে এই প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে হবে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না, তবে যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত আছি।”
ইউরোপীয় নেতাদের প্রতি কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “কিছু নেতা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলাকে হাস্যকরভাবে সমর্থন করছেন। যারা আমাদের সমালোচনা করছেন, তাদের উচিত আমেরিকার পক্ষপাতমূলক আচরণের বিরুদ্ধেও কথা বলা। যদি সাহস না থাকে, তাহলে চুপ থাকাই ভালো।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আয়াতুল্লাহ খামেনির শাসন উৎখাতের আহ্বান জানালেও, তাখত-রাভানচি একে ‘ব্যর্থ প্রচেষ্টা’ বলে উড়িয়ে দেন।
তার ভাষায়, “ইরানিরা সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা করতে পারে, কিন্তু বিদেশি আগ্রাসনের মুখে তারা সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকবে।”
তিনি আরও জানান, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের ইরানের মিত্ররা সংলাপের পরিবেশ তৈরি করতে কাজ করছে এবং কাতার এই যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।